ইপিল ইপিল গাছের উপকারিতা ও সম্ভাবনা।

  



এগাছের এক আশ্চর্য লক্ষণীয় বিষয় হলো, যে জায়গায় জন্মিলে, মানুষ,পশু-পাখি, মাছ ও কিটপতঙ্গ উপকার পাবে, সেইসব চিহ্নিত স্থানে আপনা-আপনি বুনো হিসেবে জন্মে থাকে।  

গাছটি দ্রুত বর্ধনশীল, নরম ও সহজে ভঙ্গুর হওয়ায়, উপকূলীয় বাধ ও রাস্তাঘাট ভাংগন রোধে , সারি সারি করে সাজিয়ে সবুজ বেষ্টনি তৈরি করা হয়। গ্রামাঞ্চলে  বিল ও পুকুরের ধার রক্ষায়, পাতা থেকে মাছের ও পশু-পাখির খাদ্যের যোগান দিতে, বেড়ার কাজ ও পরিবারের  জ্বালানি  চাহিদা মেটাতে গৃহস্থগন যত্নের সহিত এগাছ  লাগিয়ে  থাকে। এছাড়াও খাল বিল ও হাওড়ের পাড় ও বাঁধ রক্ষায়, ইপিল ইপিল গাছের সর্বাধিক গুরুত্বে ব্যাবহার হতে দেখা যায়

ইপিল ইপিল


 ইপিল ইপিল নরম ধাঁচের, মশৃন ডালপালা সম্বৃদ্ধ এক ধরনের কাঠ জাতের উদ্ভিদ। এর ব্যাপক উপকারের জন্য কোথাও কোথাও একে "মিরাকল" গাছও বলা হয়ে থাকে। ইপিল ইপিল গাছকে ইংরেজিতে "River Tamarind" বলা হয়ে থাকে। যার বাংলা প্রতিশব্দ  দাড়ায় "নদি পাড়ের তেঁতুল"। 

ইপিল ইপিল গাছ পৃথিবীর সব মহাদেশে কমবেশি দেখা যায়। এগাছের এক আশ্চর্য লক্ষণীয় বিষয় হলো, যে জায়গায় জন্মিলে, মানুষ,পশু-পাখি, মাছ ও কিটপতঙ্গ উপকার পাবে, সেইসব চিহ্নিত স্থানে আপনা-আপনি বুনো হিসেবে জন্মে থাকে। এছাড়াও সবসময় ও সব জায়গায় এগাছ বুনো হিসেবে জন্মিতে দেখা যায়। 

যতদুর জানা যায়, এগাছের আদি আবাস্থল মধ্য ও উত্তর আমেরিকার উপকুল বেষ্টিত অঞ্চলের দেশ সমুহে এবং পুর্ব ও পশ্চিম মেক্সিকোর উপকুলীয় অঞ্চলে।

    "পত্রমোচী"স্বভাবের এগাছটিতে গ্রীষ্মের শুরুতে ডালের ডগায় নতুন পাতা গজায় এবং লজ্জাবতি লতার মত পুস্প মঞ্জুরিতে, সাদা ও হলুদ রঙের ফুল ফুটতে দেখা যায়। যাহাতে শরৎকাল পর্যন্ত ফুল ফুটতে থাকে এবং পর্যায়ক্রমে সবুজ রঙের শীমের মত ফল হতে দেখা যায়। ফলগুলি বয়স বাড়ার সাথে সাথে পরিপক্ব হতে থাকলে সবুজ রঙটিও পরিবর্তন হয়ে, প্রঘমে হালকা বাদামি এবং আরও পরে খয়েরি রঙ ধারন করে।তখন আপনা-আপনি পড থেকে বীজ খসে পড়ে যেতে দেখা যায়। প্রতি ফলে ১০-১৫টি চ্যাপ্টা ও গোলাকার বীজ হতে দেখা যায় ।  

  গাছটি দ্রুত বর্ধনশীল, নরম ও সহজে ভঙ্গুর হওয়ায়, উপকূলীয় বাধ ও রাস্তাঘাট ভাংগন রোধে , সারি সারি করে সাজিয়ে সবুজ বেষ্টনি তৈরি করা হয়। গ্রামাঞ্চলে  বিল ও পুকুরের ধার রক্ষায়, পাতা থেকে মাছের ও পশু-পাখির খাদ্যের যোগান দিতে, বেড়ার কাজ ও পরিবারের  জ্বালানি  চাহিদা মেটাতে গৃহস্থগন যত্নের সহিত এগাছ  লাগিয়ে  থাকে। এছাড়াও খাল বিল ও হাওড়ের পাড় ও বাঁধ রক্ষায়, ইপিল ইপিল গাছের সর্বাধিক গুরুত্বে ব্যাবহার হতে দেখা যায় ।


   কোন কোন দেশের মানুষ ইপিল ইপিল এর বিচি, ডালের মত রান্না করে ও ভেজে খেয়ে থাকে এবং এতে নাকি যতেষ্ট পুষ্টিও পেয়ে থাকে। 

  এ গাছের ডালপালা জ্বালানি ও কান্ড দিয়া মুল্যবান আসবাবপত্র তৈরিতে ব্যাবহার হয়ে থাকে। 

   ইপিল ইপিল গাছের কাঠাংশ নরম ও মোলায়েম হওয়ায় কারনে, এর কাঠ কাগজ তৈরির মন্ড , ফ্লাইউড ও দিয়াশলাই ইন্ডাস্ট্রিতে ব্যাপক চাহিদা দেখা যায়। 

  এ গাছের পাতা ও বিচি পশু খাদ্য  হিসেবে খামারি ও গৃহস্থের নিকট অত্যন্ত প্রিয়। তাই অভিজ্ঞ খামারিগন ও পশু স্বাস্থ্য সতেন গৃহস্থ্য গন, খামার চত্বরে ও বশত বাড়ির আঙ্গিনায় সবুজ বেষ্টনি সৃষ্টি করে, শোভাবর্ধন এবং পশু স্বাস্থ্য  চাহিদা মেটানোর প্রচেষ্টা অনেকাংশে নিশ্চিত করে থাকেন। 
                
   লেখা ও ছবি,   এ জে এম নজরুল ইসলাম

প্রাক্তন শিক্ষক, অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথি ও হারবাল চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক কলামিস্ট।




     


Comments

Popular posts from this blog

গাছ আলুর উপকারিতা

পঞ্চমুখী এর উপকারিতা এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় চেতনা।