মাশরুম খান ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল ও হার্ট অ্যাটাককে না বলুন।



মাশরুম

দামি ও অন্যান্য প্রোটিন সম্বৃদ্ধ খাবারের সাথে তুলনা করলে দেখা যায় মাশরুমে রয়েছে, মাংসের চেয়ে দেড়গুণ, মাছের চেয়ে দুইগুন ও ডিমের চেয়ে তিনগুণ বেশি খাদ্যশক্তি।
 ১০০ গ্রাম শুকনো মাশরুমে ২৫ - ৩৫ গ্রাম উপকারী প্রোটিন রয়েছে  এবং মাংস, ডিম ও মাছে রয়েছে, উপকারী ও ক্ষতিকর প্রোটিন মিলে ১৩ - ২৫ গ্রাম

 মাশরুম

মাশরুম ব্যাঙের মত দেখতে এক প্রকার ছত্রাক। বিশ্বের সকল মহাদেশে সু উপাদেয় সব্জী ও ভেষজ ঔষধ হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে।

     এ শব্জি চাষে কোন জমির প্রয়োজন হয় না।  ঘরের বারান্দা ও বাড়ির আঙিনার ছায়া যুক্ত স্থানে অনায়াসেই অনেক চাষ করা সম্ভব ।

  এ জন্য বিশেষ কারিগরি প্রশিক্ষণ নিতে হয় ।
আজ কাল, ছোট, বড় ও আন্তর্জাতিক মানের হোটেল গুলোতে, মাশরুমের তরকারী, ফ্লোরি , জুস, কোল্ড ড্রিঙ্কস, স্যুপ, টেস্টি পাউডার ও আরো অনেক স্বাদের খাবার তৈরি হচ্ছে , যাহা  স্বাস্থ্য সচেতন ভোজন রসিকদের কাছে দামী খাবার হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে ।
          
   মাশরুম অত্যন্ত পুষ্টিকর,  সুস্বাদু ও ঔষধি গুনের কারনে ভারত ও বাংলাদেশে অত্যন্ত  জনপ্রিয় ।
   এতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন, মিনারেল, প্রোটিন, এন্টিবায়োটিক , এন্টিএক্সিডেন্ট ও অ্যামাইনো এসিড।

 খাদ্য ও পুষ্টি গবেষকদের, গবেষনায় উঠে এসেছেে, ১০০ মাশরুমে রয়েছে ২৮ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি। খাদ্য ও পুষ্টিমানে যাহা নিম্নরুপ-

# প্রোটিন ------  -------------- -------২.৬ গ্রাম

# শর্করা -------------------------------৪.২ গ্রাম

# স্নেহ ----------------------------------০.১ গ্রাম

# থায়ামিন -বি১ -- ------------------০.১ মিগ্রা

# রিবোফ্লাভিন -বি২--- -------------০.৬ মিগ্রা

# নিয়াসিন বি৩----------------------  ৩.৯ মিগ্রা

# প্যানটোথেনিক এসিড বি৫-------১.৬মিগ্রা

# ক্যালসিয়াম ---------------------------১৯ মিগ্রা

# ফসফরাস---------------------------- ১২২ মিগ্রা

# পটাসিয়াম---------------------------- ৪৫০ মিগ্রা

# সোডিয়াম------------------------------ ৬.১ মিগ্রা

# দস্তা --------------------------------১.২ মিগ্রা এবং 

# অন্যান্য উপকারী  উপাদান সমুহ। 

দামি ও অন্যান্য প্রোটিন সম্বৃদ্ধ খাবারের সাথে তুলনা করলে দেখা যায় মাশরুমে রয়েছে, মাংসের চেয়ে দেড়গুণ, মাছের চেয়ে দুইগুন ও ডিমের চেয়ে তিনগুণ বেশি খাদ্যশক্তি।

  খাদ্য ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞগন বলেন যে " মানবদেহ সুস্থ রাখতে, প্রোটিনের যে ৯ টি এসিড বেশি প্রয়োজন তন্মধ্যে অ্যামাইনো এসিডের ভুমিকা অনেক বেশি, যাহা মাশরুমে প্রচুর পরিমানে পাওয়া যায়"।

   মাছ, মাংস ও ডিম বেশি সময়, পরিমিত  পরিমানে খাইলেও, অ্যামাইনো এসিডের সহিত রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল ( এলডিএল) বেড়ে  ডায়াবেটিস,  উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। মাশরুম প্রতিদিন বেশি পরিমানে খাইলেও ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বৃদ্ধি পায় না। 

 মাশরুমে বিদ্যমান লোভস্টাটিন, আন্টাডেনিন,  ইরিটাডেনিন ও নায়াসিন, নতুন ও দীর্ঘদিন জমে থাকা খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল )ভেঙে সরিয়ে দিয়ে, উপকারী কোলেস্টেরলের (এইচডিএল) বসতি স্থাপন করায় । কারন হিসেবে পুষ্টি বিশেষজ্ঞগন বলেন,

   ১০০ গ্রাম শুকনো মাশরুমে ২৫ - ৩৫ গ্রাম উপকারী প্রোটিন রয়েছে  এবং মাংস, ডিম ও মাছে রয়েছে, উপকারী ও ক্ষতিকর প্রোটিন মিলে ১৩ - ২৫ গ্রাম।

    মাশরুমে রয়েছে মানবদেহ সুস্থ রাখার এবং রোগ  প্রতিরোধ ও প্রতিকার করার মত যাদুকরী ভেষজগুণ।  এতে বিদ্যমান প্রচুর পরিমানে ভিটামিন, মিনারেল,  ক্যালসিয়াম, আয়রণ,  পটাসিয়াম ও সেলিনিয়াম, মানবদেহ রোগমুক্ত রাখতে অত্যন্ত কার্যকরী।
মাশরুম প্রতিদিন বেশি পরিমানে খাইলেও ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বৃদ্ধি পায় না। 


মাশরুম প্রতিদিন বেশি পরিমানে খাইলেও ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বৃদ্ধি পায় না। 

সেক্স হরমোন উত্তেজিত করতে, মাশরুমে রয়েছে "গোথিওনেইন" নামক শক্তিশালী এন্টিঅক্সিজেন্ট , যাহা আপনার যৌন শক্তিকে মুহূর্তে উত্তেজিত করিতে  সক্ষম । 

ডায়াবেটিস রোগিদের নিয়মিত মাশরুম খাইলে রক্তে ইনসুলিন হরমোনের  সরবরাহ স্বাভাবিক হয় এবং গ্লুকোজ মাত্রা নিয়ন্ত্রনে থাকে।

মাশরুমে বিদ্যমান কোলেস্টেরল শুন্য কার্বোহাইড্রেট, এনজাইম, ফাইবার, পটাসিয়াম ক্ষতিকর কোলেস্টেরল (এলডিএল) এর বসতি উজাড় করে দিয়ে, রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে। তাতে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রিত হয় এবং হৃদপিন্ডে বাধাহীন ভাবে রক্ত চলাচল করে , তাতে মানবদেহ সম্পুর্ন সুস্থ থাকে।

খাদ্য ও পুষ্টিবিদ গন বলেন,চল্লিশোর্ধ্ব নর ও নারিগন নিয়মিত মাশরুম খাওয়া অভ্যাস করিলে, হাড় ক্ষয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা পাবে, বাত ব্যাথা প্রতিরোধ হবে, ত্বক মসৃণ হবে , অকাল বার্ধক্য রোধ হবে এবং দেহ থাকবে "রোগ মুক্ত ও কর্মক্ষম "।

মাশরুম হজমশক্তি বৃদ্ধি করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দুর করে
এবং স্থন, কোলোন ও প্রস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধ করতেও সক্ষম। মায়েদের গর্ভকালীন ও প্রসব পরবর্তী সময়ে, মাশরুম টনিকের ন্যায় কাজ দিবে এবং বাড়ন্ত শিশুদের সুস্থ্য ভাবে বেড়ে উঠতে ও মেধা বিকাশে সহায়তা হবে।

 ছবি ও লেখা - ডাঃ এ জে এম নজরুল ইসলাম।

প্রাক্তন শিক্ষক, অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথি ও হারবাল চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক কলামিস্ট। 

Comments

Post a Comment

Popular posts from this blog

গাছ আলুর উপকারিতা

পঞ্চমুখী এর উপকারিতা এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় চেতনা।

ইপিল ইপিল গাছের উপকারিতা ও সম্ভাবনা।