আমড়া খান ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল ও হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ করুন।
আমড়া |
যাহা মানবদেহের অন্ত্রে প্রবেশ করে "প্যাংক্রিয়াস"এর দুর্বলতা কাটাতে শক্তিশালী ভুমিকা শুরু করে। এতে "ইনসুলিন" নামক হরমোন সহজে উত্পন্ন হয়। যাহা "সুগার" নামের শক্তিকে সহজে দেহ রক্ষা কারি শক্তিতে রুপান্তর করে।
প্রিয় দর্শক ও ব্লগার ভাই বোনেরা
ছালাম ও শুভেচ্ছা
ভাল আছেন, ভাল থাকবেন এই কামনায়,আমিও ভাল থাকতে চাই, দোয়া চাই আশির্বাদ চাই।
আমি আজ আপনাদের সামনে উপস্থাপন করব ,ভিটামিন সি সম্বৃদ্ধ মৌশুমি ফল "আমড়া" সম্পর্কে । যার ইংরেজিতে নাম " Hog Plam"
বর্তমান বিশ্বে এর অনেক উপকার পাওয়ায় একে "গোল্ডেন আপেল " নামে ডাকা শুরু হয়েছে ।
বর্তমান বিশ্বে এর অনেক উপকার পাওয়ায় একে "গোল্ডেন আপেল " নামে ডাকা শুরু হয়েছে ।
আমড়া অম্ল কষ যুক্ত একটি ফল, এর রয়েছে অনেক পুষ্টি ও ভেষজ গুণ। আমড়া আমাদের দেশে সাধারনত দুই জাতের পাওয়া যায়। একটি দেখতে ছোট আরেকটি বড়। ছোটটির আটি বড়, ভক্ষন যোগ্য অংশের পরিমানও কম ও টক বেশি। বড়টির আটি ছোট, মাংসল, ভক্ষন যোগ্য অংশের পরিমান বেশি, টক তুলনা মুলক অনেক কম ও খাইতেও মজার স্বাদের।
খাদ্য ও পুষ্টি বিদদের গবেষণায় উঠে এসেছে, ১০০ গ্রাম ভক্ষন যোগ্য আমড়ায় রয়েছে, প্রায় ৬৮ কিলোক্যালরী খাদ্য শক্তি।
যাহা খাদ্য পুষ্টি মান বিচারে প্রায় নিম্নরূপ :-
* ভিটামিন-সি ---------------------------------৯৫-মিলি
* ক্যারোটিন- ---------------------৮৫০-মাইক্রো গ্রাম
* ক্যালসিয়াম- ---------------------------------৫৭-মিগ্রা
* আয়রন- -----------------------------------------৪-মিলি
* শর্করা--------------------------------------------১৬-গ্রাম
* আমিষ------------------------------------------১.২-গ্রাম
* চর্বি----------------------------------------------০.২-গ্রাম
* ভিটামিন-বি------------------------------১০.৪০ মিগ্রা
* খনিজ- ----------------------------------------০.৮-মিগ্রা
* পানি------------------------------------------------৮৫%
@ আমড়ার উপকারিতা -
★ রুচি ও ক্ষুধা বাড়াতে :-
আমড়ায় রয়েছে যতেষ্ট পরিমান ভিটামিন-বি ও ভিটামিন-সি। তাই পরিমিত পরিমানে আমড়া খাওয়া হলে অবশ্যই তা আপনার অরুচি ভাব দুর করবে ও পেটেও ক্ষুধা বাড়াবে। কয়েক দিন এক বা দুইটি আমড়া খান আর পেট ভরে খাইতে পারেন কিনা? কমেন্টে জানান।
★ রক্ত স্বল্পতা রোধে আমড়া :-
আমড়ায় বিদ্যমান প্রচুর "আয়রন" ও "ভিটামিন-সি " রক্তের হিমোগ্লোবিন মাত্রা স্বাভাবিক ভাবে বাড়িয়ে দিতে কার্যকর ভুমিকা পালন করতে সক্ষম । এতে রক্তের উজ্জ্বলতা স্বাভাবিক হয় এবং রক্তশুন্যতা ও স্বল্পতা থেকে মানবদেহ রক্ষা পায়। আমড়া খান,ভাল থাকুন।
★ স্কার্ভি, মুখের ঘা ও অন্যান্য ঘা সারাতে:-
আমড়ায় রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি, যাহা মানবদেহের পরিষ্কার করতে যথেষ্ট ভুমিকা পালন করতে সক্ষম, ভিটামিন সি এর অভাব জনিত মুখের ঘা, স্কার্ভি সারাতে ও শরীরর যে কোন ঘা শুকাইতে দেরি হইলে প্রতিদিন একটি বা দুটো আমড়া খান,দেখবেন ম্যাজিকের মত কাজ করবে।
আমড়ায় নিহিত প্রচুর পরিমানে ভিটামিন-কে ও,ভিটামিন-সি ও এন্টি অক্সিডেন্ট সমুহ রক্তের স্বাভাবিক ঘনত্ব বজায় রাখতে ভুমিকা রাখে ও এটি কার্যকর হওয়ায় স্বাভাবিক জমাট বাধা বিষয়টিও স্বাভাবিক থাকে।
★ ডায়াবেটিস কমাতে :-
আমড়ায় রয়েছে প্রচুর খাদ্য আশ,ভিটামিন-সি, ও এন্টি অক্সিডেন্ট। যাহা মানবদেহের অন্ত্রে প্রবেশ করে "প্যাংক্রিয়াস"এর দুর্বলতা কাটাতে শক্তিশালী ভুমিকা শুরু করে। এতে "ইনসুলিন" নামক হরমোন সহজে উত্পন্ন হয়। যাহা "সুগার" নামের শক্তিকে সহজে দেহ রক্ষা কারি শক্তিতে রুপান্তর করে।
মোট কথা, আমড়া মৌশুমে প্রতিদিন একটি দুটো খাইতে পারলে,ডায়াবেটিস রোগিদের রক্তের গ্লুকোজ এর মাত্রা কমিয়ে,ইনসুলিন এর মাত্রা বাড়িয়ে তুলবে এবং ইনসুলিন তৈরিতে ভুমিকা রাখবে । নিয়মিত আমড়া ফল খান ডায়াবেটিস মুক্ত থাকুন।
★ কোষ্ঠকাঠিন্য ও হজমশক্তিতে আমড়া:-
আমড়ায় বিদ্যমান প্রচুর পরিমানে "ডায়াটারি ফাইবার" হজমশক্তি বাড়াতে খুবই কার্যকরি ভুমিকা পালন করতে সক্ষম। এটি পেটে প্রবেশ করে অনেক দিনের অন্ত্রের দুর্বল মিউকাস গুলোকে শক্তিশালি করে তোলে। ফলে জমানো মল নরম হতে থাকে এবং তা ধিরে ধিরে নিরসন হয়। এক সময় কোষ্ঠকাঠিন্য দুর হয়ে মল ত্যাগ স্বাভাবিক হয়ে আসে। এতে অতিরিক্ত গ্যাস জন্মানোও হ্রাস পায়। হজমশক্তি বাড়াতে আস্ত আমড়া চিবিয়ে ও জুস তৈরি করে খাইলে সুফল পাওয়া যাবে। এজন্য বিটলবণ মিলিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
★ ত্বকের সুরক্ষায় আমড়া -
এতে রয়েছে বার্ধক্য রোধকারি "এন্টি এজেইং", "এন্টিঅক্সিডেন্ট" ও ভিটামিন-সি নামক শক্তিশালী উপাদান সমুহ। নিয়মিত আমড়া খেলে ত্বকের মশৃনতা ও স্বাভাবিক আদ্রতা বজায় থাকে। বহির্ত্বকের মরা (ডেড সেল) সেল গুলোকে সহজেই ঝরে ফেলায় এতে ত্বকের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা বজায় থাকে। এজন্য মৌশুমে প্রতিদিন অন্তত একটি বা দু'টি আমড়া খান, ত্বক সুস্থ রাখুন।
★ কোলেস্টেরল কমাতে :-
অক্সিডেন্ট","ভিটামিন-সি" ও "খাদ্য আশ" যাহা মানবদেহের অভ্যান্তরিন শিরা-উপশিরায় সহজে প্রবেশ করে, রক্তে নিহিত উপকারী কোলেস্টেরল(এইচডিএল) বাড়িয়ে , ক্ষতিকর কোলেস্টেরল(এলডিএল)এর মূল উৎপাটন করে। এতে হৃদপিন্ড সুরক্ষিত থাকে। ফলে অতিরিক্ত ওজন কমে তাহাতে ব্লাডপ্রেসারের সমতা বজায় থাকে ।
★ সিজেনাল সর্দি,কাশি ও জ্বর সারাতে:-
আমড়ায় বিদ্যমান এন্টি অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন-সি জ্বর, সর্দি, কাশি, গলা ব্যাথা ও চোখ উঠা রোগ প্রতিরোধ ও প্রতিকারে যতেষ্ট ভুমিকা রাখে। এসব সমস্যা এড়াতে প্রতি দিন অন্তত এক বা দুইটি আমড়া খান, সুস্থ থাকুন ।
বন্ধুরা আজ আমড়া নিয়ে লেখা এখানেই, আগামিতে আসব নতুন কোন উপকারি পোস্ট নিয়া সে পর্যন্ত সাথেই থাকুন ।
ডাঃ এ জে এম নজরুল ইসলাম
লেখক প্রাক্তন শিক্ষক, অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথি ও হারবাল চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক কলামিস্ট।
Comments
Post a Comment