Skip to main content

Featured

পদ্ম ফল এর উপকারিতা।

পদ্ম ফলের উপকারিতা। পদ্ম মূলত বহুবর্ষজীবী কন্দ জাতীয় ভূয়াশ্রয়ী জলজ  উদ্ভিদ। এর পাতা জলের উপরে ভেসে থাকলেও এর কন্দ জলের নিচে মাটির আশ্রয় নিয়া বংশবিস্তার করিতে থাকে এবং এভাবেই বেঁচে থাকে। জলের সাথে পাল্লা দিয়ে পদ্মের ডাটা পানির নিচে বাড়তে থাকে সেইসঙ্গে পাতা পানির উপর ভাসতে থাকে। চিকন চিকন ও মসৃণ পদ্মের ডাটার ভিতরে স্পঞ্জের মত ফাঁপা ফাঁপা থাকে। এর তরকারিও খাওয়া হয় ।সবুজ রঙের পানাকৃতির পাতাগুলো দেখতে ধার গুলো কিছুটা খাচ্ কাটা ।যাহা দেখতে প্রক‌ৃতির মতই সুন্দর। ছায়া ও রাতে পদ্ম ফুল গুলো সুশোভিত ভাবে নিজেকে ফুটিয়ে পরিবেশ পরিস্থিতিকে মোহনীয় করে তোলে।  সদ্য ফোটা ফুলের মিষ্টি গন্ধ পাওয়া যায় । ফুল থেকে যে ফলের সৃষ্টি হয় তাকে আমরা খ৺চা, পদ্ম খ৺চা ,পদ্ম ফল ,পদ্ম চাকা, কমল ফল ইত্যাদি নামে ডেকে থাকি। সবুজ রংয়ের খাচাঁকৃতি এ ফলের ভিতরে বাদামের দানার মত ছোট ছোট দানা হয়ে থাকে ।যেগুলো আমরা সাধারণত খেয়ে থাকি এবং এই ফলোই পরিপুষ্ট হলে তা থেকে গাছও জন্মাতে পারি। বহুল প্রচলিত এই পদ্মফুলের বীজ থেকে আমরা মানব দেহের উপকারার্থে অনেক প্রকার ঔষধি গুণ বা ভেষজ গুণ দেখতে পাই। পুষ্টিগুণে ভরপুর...

কতবেল ,খাবো না কি খাবোনা?








কষায় স্বাদ ও  "Enhance mouth taste factors বা "মুখের রুচি বাড়ানোর মত উপাদান সমুহ"। এফল মুখে প্রবেশ করানো মাত্রই জীহ্বা যে "কষায়" স্বাদ অনুভব করে, তাতেই Feeling the taste of the tongue বা "স্বাভাবিক হয়ে আসে জীহ্বার স্বাদ অনভুতি"। তাই যে কোন রোগভোগ কালিন ও রোগভোগের পর অরুচি সমস্যা দেখা দিলে কতবেল পথ্য হিসেবে দেয়া যাইতে পারে।


সন্মানিত পাঠকদের শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি  আজকের লেখা। আজকের লেখার বিষয় থাকছে ভারত উপমহাদেশ তথা এশিয়ার একটি "অপ্রচলিত"ফল সম্পর্কে। বাংলাদেশর সহর ও সহরের আনাচে-কানাচে ও অদুরে এফলটি কিছুটা পরিচিতি পেলেও গ্রামে-গন্জে একে অনেকেই চেনেন না। গ্রাম-গন্জে ও কৃষকের বাড়িতে কদাচিৎ এফলের ফলের গাছ দেখা যায়। এমনকি গ্রামের অনেকেই এর নামও জানেনা।
 "অম্ল" ও "কষায়" স্বাদের  "অপ্রচলিত" এ ফলটি ইদানিং কালে  ভারতবর্ষে কিছু জায়গায় বানিজ্যিক ভাবে চাষ করার চেস্টা চলিতেছে বলে শুনা যাচ্ছে। তবে কোথায় এবং কিভাবে চাষ হচ্ছে বা হবে তার সঠিক খবর কেহই দিতে পারছেনা।

হ্যা পাঠক বন্ধুগন এতক্ষণে হয়ত বুঝতে পারছেন ফলটির নাম কি।  বুঝতে দেরি হলে ধরে নেওয়া হবে, আপনারও এফল সম্পর্কে ধারনা কম। যাক সেসব কথা।

বন্ধুগন

ফলটির নাম"কতবেল"বা কয়েতবেল" ইংরেজিতে এ ফলের নাম বলে, "Apple Nut" / "Indian Beal"। কতবেল লোভী ছেলে-মেয়েরা একে "কাঠি ফল"(Pin fruit)ও বলে থাকে। কাঠির সাহায্য ছাড়া এফল খাওয়া যায়না বলেই হয়ত তারা এমন নামে ডাকেন।

    স্বাদে "কষযুক্ত","টক" ও নিজস্ব গন্ধে ভরপুর এ ফলটি সবার পছন্দ হলেও ছোট ছেলে-মেয়েদের কাছে অধিক প্রিয়। খাদ্য ও পুষ্টি দিক থেকে বিবেচনা ও অন্য সমতুল্য ফলের সহিত তুলনা করা হলে, "কাঠাল" ও "পেয়ারা'র নাম আসে প্রথমেই। "অপ্রচলিত" এফলটিতে "লিচু" ও আনারসের চেয়ে সাড়ে তিনগুণ এবং "ফলের রাজা" "আম"এর চেয়ে চারগুণ বেশি " এবং আমলকির চেয়ে দুইগুণ বেশি "ক্যালরি শক্তি"রয়েছে। 

*কতবেল* খাওয়ার নানান উপায় রয়েছে। তার মধ্যে
জ্যাম , জ্যালি,সরবত, আচার ও চাটনি তৈরি করে খাওয়ার বিষয়গুলি বেশি সমাদুত।
  
প্রতি একশো গ্রাম ভক্ষনযোগ্য "কতবেল"এ রয়েছে পন্ঞাস কিলোক্যালরি শক্তি এবং নিম্নরুপ খাদ্যমান:-

* প্রোটিন --------------------------------- -৩.৬-গ্রাম

* মিনারেল --------------------------------২.৫-গ্রাম

* সর্করা ------------------------------------৮.৮-গ্রাম

* ফ্যাট -------------------------------------০.১-গ্রাম

* ভিটামিন-বি----------------------------৭.৯-মিগ্রা 

* ভিটামিন-সি -----------------------১৩.৫০-মিগ্রা 

* ক্যালসিয়াম ---------------------------৫.৮-মিগ্রা

* আয়রন ---------------------------------০.৭-মিগ্রা 

* পানি------------------------------------------ ৮৬%


@ মুখের রুচি বাড়াতে:-

কতবেলে রয়েছে, প্রচুর পরিমানে ভিটামিন-সি, কষায় স্বাদ ও  "Enhance mouth taste factors বা "মুখের রুচি বাড়ানোর মত উপাদান সমুহ"। এফল মুখে প্রবেশ করানো মাত্রই জীহ্বা যে "কষায়" স্বাদ অনুভব করে, তাতেই Feeling the taste of the tongue বা "স্বাভাবিক হয়ে আসে জীহ্বার স্বাদ অনভুতি"। তাই যে কোন রোগভোগ কালিন ও রোগভোগের পর অরুচি সমস্যা দেখা দিলে কতবেল পথ্য হিসেবে দেয়া যাইতে পারে। 

@ সর্দি-কাশি প্রকোপে:-

  মৌশুমী সর্দিকাশি দুর করতে কতবেলে বিদ্যমান ভিটামিন-সি ও এন্টিঅক্সিডেন্ট সমুহ সক্রিয় ভুমিকা পালন করতে পারে । এফলের এসব সক্রিয় উপাদান, মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অনেক বেশি কার্যকর। বিশেষ করে বর্ষার পর খরা কালিন সময় শুরু হলে, ঠান্তা লাগা জনিত কারনে সর্দি-কাশি, জ্বর হওয়া, চোঁখ উঠা ও গলা ফোলা রোগের প্রকোপ থেকে বাঁচাতে পারে কতবেল। 

@ উচ্চ রক্ত চাপ ও হৃদপিন্ডের সুরক্ষায় :-

 কতবেলের শক্তিশালী "এন্টিঅক্সিডেন্ট"সমুহ রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল (এলডিএল) এর বংশ ধ্বংস করে উপকারি কোলেস্টেরল (এইচডিএল) এর কার্য ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে। ফলে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক হতে আর বাধা থাকেনা। এতে সুরক্ষিত হয় হৃদপিন্ড এবং স্বাভাবিক হয়ে আসে  উচ্চরক্তচাপও।

@ পুরাতন আমাশয় ও কোষ্টকাঠিন্যে :-

  কতবেলে বিদ্যমান "টানিল"নামের শক্তিশালী  "এন্টিঅক্সিডেন্ট" ও প্রচুর পরিমানে "আঁশে'র বদৌলতে   পেটের পীড়া বিদায় করতে কিছু সময়ের অপেক্ষা মাত্র।  দীর্ঘদিনের পাতলা পায়খানায় কতবেলের পেস্ট বা জুস "বিটলবণ" এর সহিত মিশাইয়া খেলে অনেক দিনের পুরাতন ও নতুন আমাশয় অবশ্যই উপকার পাওয়া যাবে এবং পুরনো পেট ব্যাথা, বদহজম ও কৃমি জনিত সমস্যার লাঘব হবে। এসব উপাদান মিউকাস মেমব্রেনর ক্ষমতা বাড়িয়ে, দীর্ঘদিনের কোষ্টকাঠিন্য দুর করে নিয়মিত মল ত্যাগের অভ্যাসও করাতে কার্যকরি ভুমিকা রাখবে। 

আরও পড়ুন -- মূলার উপকারিতা 

@ মুখের ঘা ও অন্যান্য ঘায়ে :-

চার্টে দেখা যায়, কতবেল ভিটামিন-সি আধিক্য ফল গুলি মধ্যে অন্যতম একটি ফল। ভিটামিন-সি রক্ত পরিস্কার ও রক্ত চলাচল স্বাভাবিক করার একমাত্র সক্রিয় উপাদান। যাহা মুখের ঘা ও শরীরের অন্যান্য ঘা শুকাতে যথেষ্ঠ ভুমিকা রাখে এবং রক্ত পরিস্কার করে চলাচলের বাধা সমুহ দুর করে। ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের মাড়ির সমস্যা, সারু ঘা এবং বড়দের         

 @ ডায়াবেটিস প্রতিরোধে কতবেল :- 

 কতবেল শর্করা বিহিন ভিটামিন-সি সম্বৃদ্ধ ফলগুলির মধ্যে অন্যতম একটি ফল। যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুশির খবর দিতে পারে। যার আছে শর্করা মাত্রা  কমানোর ক্ষমতা এবং ইনসুলিন হরমোন বাড়ানোর উপাদন সমুহ। মৌশুমে এফল পাওয়া সাপেক্ষে সপ্তাহে চার-পাঁচ দিন প্রয়োজনীয় পরিমানে অর্থাৎ কমপক্ষে একটি মাঝারি আকারের ফল খাওয়া হলে সারা বছর এর সুফল পাওয়া সম্ভব। কতবেল ইনসুলিন হরমোন সরবরাহকারি "প্যাংক্রিয়াস" এর শক্তি বৃদ্ধি করে রক্তের সর্করা মাত্রা স্বাভাবিক করতে পারে।                                  
       সবাই ভাল থাকবেন এই প্রত্যাশায়. .

  ছবি ও লেখা, ডাঃ এজেএম নজরুল ইসলাম     

   প্রাক্তন শিক্ষক, অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথি ও হারবাল চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক কলামিস্ট।    
  

Comments

Post a Comment