মূলা হার্টের সমস্যা ও ডায়াবেটিসে মহোপকারী।
মুলা |
মূলা প্রস্রাবের গতি বৃদ্ধি করে ফলে কিডনি সুরক্ষায় যতেষ্ট ভুমিকা পালন করে। মানবদেহের টক্সিক মুক্ত করে কিডনি, প্রস্টেট, ব্লাডার ও ডাইজেস্টিভ ট্রাকের কোনায় কোনায় জমে থাকা টক্সিক গুলো সরিয়ে ত্বকের লাবণ্যও ফিরে আনে। মুলা কিডনিতে পাথর জমানো সমস্যাও দুর করে
মূলামূল জাতিয় একটি সব্জির নাম । সব মহাদেশে কমবেশি দেখা যায়। মাটির নিচে জন্মানো মূলাংশকে " মূূলা " বলা হয় । উপরের অংশ পাতা। এটি একটি কান্ডহীন উদ্ভিদ।
মূলা বৈচিত্র্যময় শব্জি এর স্বাদ গন্ধ সবই আলাদা। মুলা সাধারণত লাল, গোলাপি, বেগুনী ও সাদা-বেগুনী রং এর হয়ে থাকে।
মূলায় "ইসোনিওসায়ানেট" , "মাইরোসিনাম", "গ্লুকোসায়ানেট" এসিড সমূহ থাকার কারনে ইহা তীব্র গন্ধ ছড়ায়।
মূলা শীতকালিন শব্জি হলেও আজ কাল বারো (১২) মাসেই হাটে ও বাজারে দেখা যায়। এর সব কিছুই শাক ও সব্জী হিসেব খাওয়ার উপযোগী
খাদ্য ও পুষ্টি গবেষণায় উঠে এসেছ, ১০০ গ্রাম মূলায় মাত্র ১০-১৬ ক্যালরি শক্তি।
★ খাদ্য আশ ------------------------------১.৮ --গ্রাম
★ ভিটামিন-সি -----------------------------১৫--মিগ্রা
★ ফলেট -------- ----------------- ২৫ মাইক্রোগ্রাম
★ পটাসিয়াম ------------------- --------২৩৫ --মিগ্রা
★ ক্যালসিয়াম ------------------------------২৫ মিগ্রা
★ম্যাগ্নেসিয়াম- -----------------------------১১ মিগ্রা
★ জিংক - -------- ------------------------০.২৫ মিগ্রা
★ পানি- ---------------------------------- ৯০ % এবং
★ অন্যান্য উপকারী উপাদান সমুহ
মূলার কচকচে সালাদ অনেকের কাছে পছন্দসই হলেও আবার কেউ কেউ একেবারে পছন্দ করে না । তরকারি ক্ষেত্রেও একই অভিমত। কচি মূলার তরকারি ভাল স্বাদ হলেও মোটা ও বাড়তি মূলা অনেকেই পছন্দ করে না।
শাক হিসেবে কচি মূলার পাতা মোটামোটি সবার কাছে পছন্দনীয়। অনেকেই মূলা পাতা দিয়া সাজানো খাবার পরিবেশন করিতে পছন্দ করেন ।
মূলা |
স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিদগন মূলা এর গুনাগুন সম্পর্কে এ ভাবে বর্ননা করে থাকেন :-
★ হজমশক্তির কাজে মূলা :-
মূলা শাকের রয়েছে প্রচুর পরিমানে আঁশ , যাহা হজমশক্তি বৃদ্ধিকরে। দুষন বর্জ কেটে কেটে বের করে দেয় তাতে কোষ্ঠকাঠিন্য দুর হয়ে স্বাভাবিক মল ত্যাগের অভ্যাস গড়ে উঠে। পেটের ভিতরে অতিরিক্ত জমানো ও পুরাতন গ্যাস বের করে দেয়।
★ হৃদপিন্ডের সুরক্ষায় :-
মূলায় রয়েছে শক্তিশালী "ফাইটোস্টেরল", "অ্যান্থোসায়ানিন" নামক "এন্টি অক্সিডেন্ট"যাহা হৃদপিন্ডের ক্ষতিকারক জীবানুর সহিত লড়াই করে, হৃদপিন্ডকে যথাযথ সুরক্ষা দিতে কার্যকরি ভুমিকা পালন করে। ফলে হৃদপিন্ড থাকে আরও সুরক্ষিত।
মূলা প্রস্রাবের গতি বৃদ্ধি করে ফলে কিডনি সুরক্ষায় যতেষ্ট ভুমিকা পালন করে। মানবদেহের টক্সিক মুক্ত করে কিডনি, প্রস্টেট, ব্লাডার ও ডাইজেস্টিভ ট্রাকের কোনায় কোনায় জমে থাকা টক্সিক গুলো সরিয়ে ত্বকের লাবণ্যও ফিরে আনে। মুলা কিডনিতে পাথর জমানো সমস্যাও দুর করে।
★ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে-
মূলা লো-ক্যালরির সব্জি হওয়ায়, পরিমিত পরিমানে খেলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস এ যতেষ্ট উপকার পাওয়া যাবে। খাদ্য বেশিক্ষণ পেটে থাকার কারনে, ঘন ঘন খাওয়ার প্রবনতা কমে যায় ফলে অন্ত্রে সুগার কম উৎপন্ন হয়ে, ডায়াবেটিস কমে যায়।
মূলা ও শাকে বিদ্যমান, ভিটামিন ও খনিজ সমুহ মানবদেহের সকল চাহিদামত ঘাটতি পুরনে ভুমিকা রাখতে পারে।
★ উচ্চ রক্তচাপ কমাতে :-
মূলা বিদ্যমান প্রচুর পরিমানে "পটাসিয়াম ",যাহা রক্ত প্রবাহের বাধা সমুহ দুর করতে কার্যকরি ভুমিকা পালন করে। ফলে রক্ত সরবরাহ নিশ্চিত হয়ে রক্তের চাপ কমে আসে। এতে হৃদপিন্ড স্বাভাবিক কার্যক্রম চালাতে বাধা মুক্ত হয়।
★ সর্দি কাশি ও এ্যাজমায় মুলা :-
সেজনাল জ্বর, সর্দিকাশি ও অ্যাজমা রোগ প্রতিরোধ ও প্রতিকারে মূলার যতেষ্ট ভুমিকা রয়েছে।
★★ অপকারিতা :-
যাদের থাইরয়েড সমস্যা আছে ও পেটে অতিরিক্ত গ্যাস, অম্লাজির্ন আছে তাদের পক্ষে না খাওয়াই ভাল। তবে পরিমিত পরিমানে না খাইলেও বদহজম হয়ে পেটে গ্যাস তৈরি করতে পারে। সমস্যা হলে এড়িয়ে চলুন। ভাল থাকুন।
আজ এই পর্যন্ত, সাথেই থাকুন।
লেখা ও ছবি - ডাঃ এজেএম নজরুল ইসলাম।
প্রাক্তন শিক্ষক, অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথি ও হারবাল চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক কলামিস্ট।
Comments
Post a Comment