ধনিয়া পাতা টাইপ-২ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন করে।
ধনেপাতায় ও বীজে রয়েছে দুষ্প্রাপ্য এন্টি অক্সিডেন্ট যাহা ইনসুলিন তৈরি কারি প্রধান অর্গান "প্যাংক্রিয়াস" এর স্বাভাবিক কার্যক্রম সচল রাখতে ভুমিকা রাখে। ফলে ইনসুলিনের সাভাবিক সরবরাহ বজায় থাকে ও রক্তের সুগারও স্বাভাবিক পর্যায়ে থাকে।
ধনে/ধনিয়াপাতা
সন্মানিত দর্শক ও ব্লগার ভাই বোনেরা জাতি ধর্ম নির্বিশে জানাই ছালাম ও শুভেচ্ছা
আশা করি সবাই ভালই আছেন আমিও ভাল থাকার চেষ্টা করছি।
আজ আপনাদের সামনে উপস্থাপন করব, সবার চেনা, ঔষধী গুনে ভরপুর, চির সবুজ,বর্ষজীবী একটি সুগন্ধি মসলা "ধনিয়া" সম্পর্কে ।
ধনিয়া বা ধনে নানান নামে পরিচিত। ইংরেজি নাম Coriander। ধনিয়াপাতা মসলা হিসেবে ছোট বড় সবার কাছে সমান সমাদৃত। আমরা এর বহুমুখী ব্যবহার করে থাকি, যেমন -তরকারির স্বাদ বাড়াতে মশলা হিসেবে, সালাদ ও অন্য সালাদের স্বাদ ও শোভা বর্ধনে।
স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিদদের গবেষণা ও মতামতের ভিত্তিতে যায় যে,
১০০ গ্রাম ধনিয়া পাতায় রয়েছে এনার্জি- ২৪ কিলোক্যালরী। যাহা খাদ্য ও পুষ্টি মানে নিম্নরুপ -
*কার্বোহাইড্রেট --------------------------------৩.৬৯ গ্রাম
* সুগার- ---- -------------------------------------৮৮-গ্রাম
* খাদ্য আশ-----------------------------------------৩-গ্রাম
* প্রোটিন ---------------------------------------২.১২-গ্রাম
* ফ্যাট ------------------------------------------০.৫০-গ্রাম
* ভিটামিন-এ-------------------------৩৩৮-মাইক্রো গ্রাম
*লিউটিন -----------------------------৩৭০-মাইক্রো গ্রাম
* বিটা ক্যারোটিন-----------------৪০২০-মাইক্রো গ্রাম
* থায়ামিন (বি১)----------------------------০.০৬৮-মিগ্রা
* রিবোফ্লাভিন (বি২)---------------------- ০.১৬৫-মিগ্রা
* নিয়াসিন (বি৩) ---------------------------১.১১৫-মিগ্রা
* প্যানটোথেনিক এসিড-(বি৫)----------- ০.৫৮ মিগ্রা
* ভিটামিন (বি৬)--------------------------- ০.১৫০-মিগ্রা
* ফলেট বি৯ ---------------------------৬৫-মাইক্রো গ্রাম
* ভিটামিন-সি -----------------------------------২৮-মিগ্রা
* ভিটামিন -ই -----------------------------------২.৮-মিগ্রা
* ভিটামিন-কে ----------------------৩১২-মাইক্রো গ্রাম
* ক্যালসিয়াম -----------------------------------৬৮-মিগ্রা
* ম্যাগনেসিয়াম ---------------------------------২৭-মিগ্রা
* আয়রন -------------------------------------১.৮০-মিগ্রা
* ম্যাজ্ঞানিজ -------------------------------০.৪৩০-মিগ্রা
*সোডিয়াম --------------------------------------৪৭-মিগ্রা
* পটাসিয়াম ----------------------------------৫২৫-মিগ্রা
* ফসফরাস-------------------------------------৫০-মিগ্রা
* জিংক---------------------------------------- ০.৬-মিগ্রা
* পাণি ----------------------------------------- ৯৩%
## ধনিয়াপাতার উপকারীতা-
# জ্বালা কমাতে ধনিয়াপাতা:-
তাজা ও গাড় রঙের সবুজ ধনিয়াপাতায় রয়েছে, সিনিউল নামে এসেনশিয়াল অয়েল ও এসিড লিনোলিক। এ কারনে এর মধ্যে রয়েছে, এন্টি আর্থাইটিক ও এন্টি রিউমেটিক গুন সমুহ । এই বৈশিষ্ট্যের কারনেই ধনিয়াপাতা খাইলে বা রস ব্যবহার করলে ত্বকের জ্বালাপোড়া ও ফোলাভাব কমে যায়।
# ত্বকের লাবণ্যতা ধরে রাখতে :-
ধনিয়াপাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমানে এন্টিঅক্সিডেন্ট, এন্টি এইজিং, "ডিসইনফ্যাকট্যান্ট, এন্টি ফাংগাল" ও এন্টি সেপটিক" উপাদান সমুহ। যাহা বহির্ত্বকের মরা (ডেড) কোষ গুলোকে সহজেই সরিয়ে নতুন তাজা কোষের পুনর্স্থাপন ঘটায়। ফলে ত্বক উজ্জ্বল ও সাইনিং দেখায়।
# এলার্জি জনিত সমস্যা কমাতে :-
ধনিয়াপাতায় বিদ্যমান শক্তিশালী এন্টি হিস্টামিন সমুহ সিজেনাল জ্বর, সর্দী কাশি, চোখ উঠা, চিকেন পক্স ও পেটের সমস্যা প্রতিরোধ ও প্রতিকার কর লক্ষণীয় ভুমিকা পালন করতে সক্ষম।
# ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে :-
ধনেপাতায় ও বীজে রয়েছে দুষ্প্রাপ্য এন্টি অক্সিডেন্ট যাহা ইনসুলিন তৈরি কারি প্রধান অর্গান "প্যাংক্রিয়াস" এর স্বাভাবিক কার্যক্রম সচল রাখতে ভুমিকা রাখে। ফলে ইনসুলিনের সাভাবিক সরবরাহ বজায় থাকে ও রক্তের সুগারও স্বাভাবিক পর্যায়ে থাকে।
# রক্ত শুন্যতায় :-
ধনিয়া পাতা ও বীজে রয়েছে প্রচুর এন্টিঅক্সিডেন্ট,আয়রন,ও ভিটামিন-সি মানবদেহের রক্তে লোহিত কনিকা বৃদ্ধি করতে সক্ষম। ফলে রক্তে লাল রং ধারন করে। মায়েদের প্রসব পরবর্তী রক্ত স্বল্পতায় ও কঠিন কোন রোগ ভোগের পর ধনিয়াপাতা ও বীজ খুবই উপকারী।
# হৃদপিণ্ডের সুরক্ষা ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে :-
ধনিয়াপাতা ও বীজে রয়েছে প্রচুর পরিমানে দুষ্প্রাপ্য এন্টি অক্সিডেন্ট সমুহ যাহা মানবদেহের শিরা, উপশিরা ও হৃদপিন্ডের রক্তে নিহিত খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল ও টিজি)এর মুল উৎপাটন করে, উপকারী কোলেস্টেরল (এইচডিএল)এর বসতি স্থাপন করায় ফলে হৃদপিন্ড থাকে সুস্থ। এতে দেহও সুস্থ থাকতে আর বাধা থাকেনা। সাথে আয়ুও বেড়ে যায়।
আরও পড়ুন ----রসুনের উপকারিতা
# হাড় ক্ষয় ও দাঁতের যত্নে :-
এতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ক্যালসিয়াম,এন্টিঅক্সিডেন্ট ও ইনফ্লামেটরী উপাদান সমুহ। হাড় ব্যাথা, জয়েন্টের ব্যাথা, দাত ব্যাথা সহ দেহের কোন ব্যাথায় এসব উপাদান অত্যন্ত কার্যকরি। যাহা হাড়ের ও দাতের ক্ষয়ও রোধ করে।
# যৌন শক্তি বাড়াতে :-
ধনিয়াপাতা ও বীজে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন, নিউট্রিসন ও ফসফরাস যাহা মানবদেহ সুস্থ রেখে স্নায়ুবিক শক্তি বৃদ্ধি করে। ফলে যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। এ জন্য দুই চামুচ ধনিয়া পাতার রস মধু বা চিনির সহিত মিশিয়ে দিনে ২ বার খেলে উপকার পাওয়া যাবে।
# মাথা ব্যাথায় :-
ধনে পাতার রস ব্যাথা স্থানে লাগালে যে কোন ব্যাথায় উপকার পাওয়া যাবে।
# কিডনি সমস্যায়:-
ধনিয়াপাতা বিভিন্ন উপায়ে নিয়মিত খেলে দেহের দুষিত বর্জ্য সমুহ সহজেই মল মুত্র, ঘাম ও লালার সহজেই নিষ্কাশন হয়। ফলে কিডনি থাকে সুরক্ষিত ।
# কিভাবে খাওয়া যায়:-
ধনিয়াপাতা তরকারিতে মশলা হিসেবে তরকারিতে, মুড়ি মাখাতে, পিয়াজু, ফ্লোরি, চপ, চাটনি, ভর্তা, সালাদ, শাক তরকারি, জুস, কাচা চিবিয়ে, যে ভাবেই খাওয়া হোক না কেন , পরিমিত পরিমানে খাইলে প্রায় একই রকম উপকার পাওয়া যাবে।
আজ এ পর্যন্ত ,আবার দেখা হবে আগামী পর্বে নতুন কিছু নিয়া, সাথেই থাকুন।
ধন্যবাদ সবাইকে।
ছবি ও আর্টিকেল : ডাঃ এ জে এম নজরুল ইসলাম।
প্রাক্তন শিক্ষক, অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথি ও হারবাল চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক কলামিস্ট।
Welcome to my activities
ReplyDelete