থানকুনি পাতার যত উপকারিতা।
থানকুনি পাতা
সন্মানিত পাঠক, সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। আশা করে সবাই ভাল আছেন আমিও ভাল আছি।
আমার আজকের উপস্থাপনাা বিষয়"থানকুনি পাতা" সম্পর্কিত। এ পোস্টটি আপনাদর সামান্য উপকারে আসলে নিজেকে সার্থক বলে ভাবব।
আমার আজকের উপস্থাপনাা বিষয়"থানকুনি পাতা" সম্পর্কিত। এ পোস্টটি আপনাদর সামান্য উপকারে আসলে নিজেকে সার্থক বলে ভাবব।
থানকুনি পাতা (বৈজ্ঞানিক নাম Centella asiatica, ইংরেজি নাম Indian Pennywort) বাংলাদেশ তথা ভারত উপমহাদেশের সবার অতি পরিচিত একটি ঔষধি গাছ। বাংলার মাঠে, ঘাটে, উচু ও পতিত জমিতে, বুনো হিসেবে জন্মে থাকে। এজন্য এর কোন প্রকার যত্ন আত্মি করতে হয়না। আদি কাল থেকে গ্রামের কৃষাণ-কৃষানিরা পরিবারের সুরক্ষায় এটি ঔষধি হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। থানকুনি পাতার সাথে এদেশের সবাই মোটামুটি পরিচিত এবং ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন।
ভারত উপমহাদেশে তথা বাংলাদেশে এর বহুবিধ ব্যাবহার হয়ে থাকে।
থানকুনি পাতা গ্রাম গন্জে থানকুনি শাক নামে বেশি পরিচিত। আসলেই হালকা তেঁতো স্বাদের এ শাকটি,ভাজি,ভর্তা, পেয়াজু, পাকোড়া, কাচা ও চায়ের সঙ্গে মিশিয়ে এবং রস করে সহজভাবে আমরা খেয়ে থাকি।
থানকুনির গোলের মধ্যে খাজ কাটা ও বোটার দিকে মিলানো পাতা গুলো রোগ নিরাময় ও প্রতিরোধে খুবই কার্যকর । খাদ্য হিসেবে সরাসরি গ্রহন কে রোগ নিরাময়ের উপায় হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এজন্য তাজা পাতার রস ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
আধুনিক বিশ্বের প্রায় সকল ঔষধ তৈরির কোম্পানি গুলোতে সুনামের সহিত পেটেন্ট হিসেবে বাজার জাত করছে।
স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিষয়ক একাধিক গবেষণার ফলাফলে উঠে এসেছে, নিয়মিত থানকুনি পাতা খেলে,মাথা থেকে পাঁ পর্যন্ত শরিরের সকল অংশ সুস্থ ও কার্যক্ষম থাকে।
আর উপকার তার তো হিসাব রাখাই ভার অর্থাৎ থানকুনি পাতার উপকারের কোনো শেষ নাই।
♥ থানকুনি পাতা চুল পড়া হ্রাস করে-
ভারতিয় আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে, নিয়মিত থানকুনি পাতা চিবিয়ে বা রস করে খেলে, মাথার স্কাল্প শক্তিশালি হয়। চুল পড়া মাত্রা হ্রাস পায়।
সমপরিমাণ থানকুনি পাতা, তুলসীপাতা কাঁচা আমলকী বেটে পেস্ট তৈরি করে, মাথায় লাগালে চুল পড়া হ্রাস পেতে থাকে। সপ্তাহে অন্তত তিন দিন মাথায় মেখে দশ-পনের মিনিট ধুয়ে ফেলতে হবে। নিজেই দেখুন চুলের কি উপকার হচ্ছে ।
♥ থানকুনি পাতা শরীর টক্সিন মুক্ত করে-
স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞদের মতে, থানকুনি পাতায় রয়েছে, এন্টি-টক্সিক উপাদান,যাহা নিয়মিত খেলে মানবদেহের ক্ষতিকর টক্সিন বের করে দেয়। এতে দেহ হয় বিষ ও রোগ মুক্ত ।
এক চামুচ মধুর সহিত এক চামুচ পাতার রস মিশিয়ে খেলে তা আরও কার্যকরী হতে দেখা যায়।
♥ ঘা শুকাতে থানকুনি পাতা-
থানকুনি পাতায় বিদ্যমান স্পেয়োনিস নামক উপাদান শরীরের যে কোন ঘা শুকাতে খুবই কার্যকর। কাটা ঘায়ে বা সদ্য কাটা স্থানে থানকুনি পাতা বেটে লাগালে তাৎক্ষনিক আরোগ্য পাওয়া যেতে পারে।
♥ পেটের সমস্যায় থানকুনি পাতা-
থানকুনি পাতায় বিদ্যমান একাধিক এনজাইম সমুহ স্বাভাবিক গ্যাস্টিক যুস নিরসন করে হজম শক্তি বাড়াতে পারে। ফলে অম্বলের পীড়া ও বদহজমের সমস্যা নিমিষেই দুর হয়। এজন্য নিয়মিত তাজা পাতা চিবিয়ে বা রস করে খেতে হবে।
♥ ত্বকের যত্নে থানকুনি-
ত্বক ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞদের মতে,থানকুনি পাতায় রয়েছে ত্বকের লাবণ্য ধরে রাখার মত বিটা ক্যারোটিন, ফাইটোকেমিকাল ও ফ্যাটি এসিড। এসব উপাদান ত্বকের ভিতরের অংশে কাজ করে। এতেই ত্বকের জেল্লা বাড়িয়ে উঠে। এতে ত্বকের বলিরেখা ভাব ও বুড়িয়ে যাওয়া ভাব কমতে থাকে।
♥ থানকুনি পাতা আমাশয়ের সমস্যা দুর করে-
ভারতীয় আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে, থানকুনি পাতার রস চিনি মিশিয়ে দু চামুচ পরিমাণ দিনে দুইবার খেলে আমাশয় রোগ শরীরে থাকতে পারেনা।
♥ পেটের পীড়ায় থানকুনি পাতা-
ভারতীয় আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে, থানকুনি পাতার সহিত সম পরিমাণ আনারসের পাতার রস, আমগাছের ছালের রস একসঙ্গে মিশিয়ে খেলে পেটের যাবতীয় উপকার হয় এবং ক্রিমি সমস্যার সমাধান করে।
♥ থানকুনি পাতার রস কাশি কমায়-
আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে, থানকুনি পাতার রস চিনির সহিত মিশিয়ে, প্রতেহ দুই চামুচ করে, এক সপ্তাহ খেতে পারলে কাশি আপনার শরীর থেকে বিদায় নিবে।
♥ জ্বরের তীব্রতা কমাতে থানকুনি-
আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় ও সিজনাল জ্বর কমাতে থানকুনি পাতায় রয়েছে যাদুকরী ভুমিকা। থানকুনি পাতার রসের সহিত সমপরিমাণ শিউলি পাতার রস মিশিয়ে ১ চামুচ করে দিনে ২ বার করে খেলে জ্বরের প্রকোপ কমতে থাকে ।
♥ গ্যাস্টিক-আলসার দুর করতে থানকুনি-
অর্ধ লিটার দুধে ১৫০ গ্রাম চিনি মিশিয়ে, তাতে ৫০ গ্রাম থানকুনি বোটা সহ পাতা ছেড়ে দিয়ে ১০ মিনিট জ্বাল করুন। মিশ্রণটি ২ চামুচ করে, এক সপ্তাহ খেয়ে গ্যাস্টিক-আলছার কে চিরতরে বিদায় দিন।
আরও পড়ুন -- মাছ খাওয়ার নিয়ম
লেখা ও ছবি ডাঃ নজরুল ইসলাম
লেখক, প্রাক্তন শিক্ষক, হোমিওপ্যাথি ও হারবাল চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক কলামিস্ট।
Welcome to all
ReplyDelete