পিপুল এর উপকারিতা।








*পিপুল এর ব্যবহার
------
টিপুর সাধারণত রান্না সুস্বাদু করার জন্য এখন পর্যন্ত ব্যবহার হয়ে থাকে ।তবে এর রয়েছে অত্যাধিক ঔষধি গুণ যে গুণের কারণে মানব শরীরে এর প্রয়োগ অনেক বেশি। বিশ্বের মধ্যে ভারতের হাটে-বাজারে মুদি দোকানে কাঁচা তরকারি দোকানে পিপুল মরিচ এবং এর ডালপালা বিক্রি হতে দেখা যায়। এটি ভেষজ ঔষধি গুনের জন্য এক নামে সারা বিশ্বে পরিচিত।

*পিপুলের ভেষজ ঔষধি গুন
-------
ভারতীয় সুপ্রসিদ্ধ আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে পিপুলের মোটামুটি নয়টি গুন উল্লেখ করা হয়েছে। মস্তিষ্কের রোগ,  গলার রোগ ,কাশি, ঠান্ডা ওসর্দি প্রশমপ ও দীপ্তিময়।
কথিত আছে সেই সময় দেবতারা অন্ত্র ও কৃমি রোগে এর বিশেষ গুনাগুনের কথা বর্ণনা করে গেছেন।

এছাড়াও পিপল মরিচ তার পাতা, গাছ কান্ড, দেহের ক্যান্সার সারানোর মতো উপাদান থাকায় এটি দেবতারা ক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যবহার করে গেছেন। ক্যান্সার, মস্তিষ্কের টিউমার ,লিকোমিয়া অন্ত্রের ক্যান্সার স্তন ক্যান্সার ফুসফুসের ক্যান্সারে বিশেষ উপকারী।

পিপুলের মধ্যে পাওয়া যায় দুষ্প্রাপ্য কিছু এন্টি অক্সিডেন্ট ,যা মানব শরীর কে সহজে অক্সাইড মুক্ত করে সুস্থ থাকতে সহযোগিতা করে ।

পিপুলের শক্তিশালী ও দুস্প্রাপ্য উপাদান সমুহ হলো-
পেলিটোরিন, পাইপারসাইড, পাইপারলঙ্গিন,পিপারিন, 
লং অ্যামাইড,পাইপারনোলিন,পাইপারল্যাটাইন,।





*নিদ্রাহীনতায় পিপল এর ব্যবহার
আপনি যদি সবসময় নিদ্রাহীনতায় ভোগে থাকেন কিংবা গভীর রাতের পরেও আপনার ঘুম আসছে না ,এমন অবস্থায় পিপুল আপনাকে যথা উপযুক্ত ব্যবস্থা দিতে পারে। এর জন্য দুই থেকে চার গ্রাম পিপুল শিকড়ের রস গুড় বা চিনি মিষ্টির সাথে খেলে আপনার নিদ্রাহীনতা সমস্যা সমাধান হতে পারে ।এই জন্য আপনাকে দিনে দুইবার এ কাজটি করতে হবে অর্থাৎ সকাল এবং বিকেলে খেতে হবে হবে। সন্ধ্যার পর কখনোই এরকম সমীচীন হবে না ।তাতে আরো ঘুমের বেশি সমস্যা হতে পারে।

*কফ ও কাশি সারাতে পিপুলের ব্যবহার
ঘুহঘুসে জ্বর শুকনো ও খুসখুসে কাশি যক্ষার পূর্ব লক্ষণ বলে চিকিৎসকেরা জানিয়ে থাকেন ।এমন অবস্থা দেখা দিলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হইয়া পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রোগ নিরূপণ করা দরকার। আপনি মনে করলে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার আগেই দু তিনশ মিলিলিটার পিপুলের রস  সামান্য গরম পানির সাথে সকাল বিকাল খেয়ে দেখতে পারেন। এভাবে সপ্তাহখানেক খাওয়ার পর যদি আপনি অসুস্থ বোধ করতে থাকেন। তখন অবশ্যই আপনাকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।




*যেকোনো জ্বর সারাতে পিপুল এর ব্যবহার
আপনি যখন দীর্ঘদিন জ্বরে ভুগে আস্তে আস্তে কঙ্কাল ছার বা ফ্যাকাসে হয়ে যাবেন এমন অবস্থায় পিপুলের রস শিকড় চূর্ণ আপনার অমৃতবত কাজ করতে পারে। এর জন্য আপনাকে ২-৩ মিলিগ্রাম পিপুল চূর্ণ দশ-পনেরোটা হিসাবে মিশিয়ে কয়েক দিন খেতে হবে। ইনশাল্লাহ আপনি অবশ্যই এই জ্বর থেকে মুক্তি পাবেন

*মেদ ভুড়ি কমাতে পিপল এর ভূমিকা
আমরা যারা অত্যন্ত মোটা মাংসবহুল শরীর মেদ ভুঁড়ি বেশি তাদের জন্য পিপুল হতে পারে পরম বন্ধু। এর জন্য আপনাকে পিপুল চূর্ণ মধুর সাথে মিশিয়ে দিনে দুইবার নিয়মিতভাবে মাসাধিক খেতে হবে ।এতে অবশ্যই আপনি মেদ ভুড়ি থেকে রেহাই পাবেন। শুধু ঔষধ খেয়ে মেদ ভুড়ি কমানো কোনোক্রমেই সম্ভব নয় ।এর জন্য আপনাকে পরিমিত মাত্রায় পরিমিত পরিমাণে সকল খাবার গ্রহণ করতে হবে। ভাতে ভাতে খুদা না মিটিয়ে পাশাপাশি দুবেলা দুটি করে রুটি খেলে উপকার পাওয়া যাবে। সাথে মিষ্টি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চললে আপনি দ্রুত এ সমস্যা থেকে নিস্তার পেতে পারেন। আপনি যে খাবারে গ্রহণ করেন না কেন তা সহজপাচ্য হতে হবে।

*হাঁপানি ও শ্বাসকষ্ট পিপল এর ব্যবহার
আমরা আজকাল অনেকেই দেখতে পাই অল্পকিছু হাঁটাচলা করলে কিংবা সামান্য ভারী কাজ করলে সহজে হাপিয়ে ওঠে এটি হাঁপানির একটি বড় লক্ষণ কিংবা দুর্বলতা হতে পারে ।এমন সমস্যা ধারি লোকদের জন্য পিপুল বন্ধু মত উপকার করতে পারে।
জন্য আপনাকে পিপুলের শিকড় বা পিপুল থেঁতো করে গরম পানিতে সিদ্ধ করে দিনে তিন চারবার খাওয়া যেতে পারে ।এতে হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টের শীঘ্রই লাঘব হবে।

*কৃমি সমস্যায় পিপল এর ব্যবহার
যে ধরনের কৃমি হোক না কেন আপনার প্রতিদিন সকালে 200 গ্রাম গুলি খেলে ভুলে গেলে আপনি কৃমি রোগ থেকে নিস্তার পাবেন এতে আপনার প্রেমের উপদ্রব একেবারেই কমে যাবে।


*মাথাব্যথায় পিপল এর ব্যবহার

মাথা ব্যাথা হলে পিপুলের কান্ড বা পাতা বা পিপুল বেটে গোলমরিচ ওয়াদার সাথে কপালে ব্যবহার করলে সহজেই আপনার মাথা ব্যাথা কমে যাবে



*যাদের ঘনঘন দাঁত ব্যথা হয় তারা পিপুলের চূর্ণ হলুদের গুড়ার সাথে মিশিয়ে দাঁতে ব্যবহার করলে সহজেই ব্যথা কমে যাবে







*হৃদপিন্ডের সমস্যায় পিপল এর ব্যবহার

দারচিনি ও পিপল মিহি করে এর সাথে মিশিয়ে দিনে 2 বার খেলে হৃদরোগ ও কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। শিকড়ের লেবু গাছের বাকলের সাথে বেটে গুড়া করে এক কাপ জলে ভিজিয়ে রেখে নিয়মিত দুবেলা মাসখানেক খেলে আপনার হৃদরোগের সমস্যা মিটে যাবে।


অর্শ নিরাময় পিপুল চূর্ণ ভাজা জিরার সাথে মিশিয়ে ঘরের শহীদ খেলে অর্শ রোগ নির্মল হতে পারে ভুল না পাওয়া গেলে ছাগলের দুধ খাওয়া যাবে এই মিশ্রণটি জ্বাল দিয়ে ঘন করে অর্শ এর বঁটিতে লাগিয়ে দেওয়া যায়


কি দংশনের স্থানে পিপুলের শিকড় লাগালে বা প্রলেপ দিলে দুঃখ ব্যথা কমে যায়।


তবে কারো কারো ক্ষেত্রে পিপুল সংবেদনশীল হয়। এলার্জির বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে পারে সে ক্ষেত্রে বুঝে-সুঝে পরিমিত মাত্রায় খেতে হবে।



সাথেই থাকুন।

---------


লেখক প্রাক্তন শিক্ষক ও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক।

Comments

Popular posts from this blog

গাছ আলুর উপকারিতা

পঞ্চমুখী এর উপকারিতা এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় চেতনা।

ইপিল ইপিল গাছের উপকারিতা ও সম্ভাবনা।