ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও তাড়াতে




কাঁকরোল 

কাঁকরোল বাংলাদেশ সহ বিশ্বের অনেক স্থানের একটি জনপ্রিয় সবজি ।কাকরুলের নাম ডাক শুধু সবজি হিসেবেই নয়, এতে রয়েছে অনেক পুষ্টিকর ও মিনারেল উপাদান। দুষ্প্রাপ্য ক্যারোটিন সমৃদ্ধ এ সবজিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ক্যারোটিন, ফসফরাস ,ভিটামিন-বি, আমিষ, কার্বোহাইড্রেট ও
 খনিজ পদার্থ। কাঁকরোল সম্পর্কে যতদূর জানা যায়
 এর উৎপত্তি ভারত উপমহাদেশেই। একটি কুমড়ো জাতের একটি সবজি পরিবার। উপকার ভেদে এবং পাওয়া সাপেক্ষে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন বাজারে এর দাম উঠানামা করে থাকে।
 মজার ব্যাপার হলো, একই গাছে পুরুষ ফুল ও স্ত্রী ফুল হয় না, পুরুষ গাছে শুধু পুরুষ ফুল এবং স্ত্রী গাছে শুধু স্ত্রী ফুল হয়ে থাকে ।আরো মজার বিষয় হল এর জন্য আলাদা আলাদা করে গাছ লাগাতে হয় না ।এর বিভিন্ন ডালে এর এমন রূপান্তর দেখা যায়।পুরুষ ও স্ত্রী গাছের পরাগ মিলন ঘটে এতে ফল ধরে।
 সাধারণত কাঁকরোল গ্রীষ্মকালের সবজি। বিভিন্ন দেশ, অঞ্চল ও ভাষা ভেদে এর বিভিন্ন নাম রয়েছে। তবে আমাদের দেশে কাঁকরোল কে কাকরুল বা কাকেল্লা বলা হয়ে থাকে ।
ইংরেজি নাম spiny guard, guard spine, balsam pear etc

যতদূর জানা যায় ১০০ গ্রাম ভক্ষণযোগ্য কাঁকরোলে ৫২ গ্রাম কিলো ক্যালরি শক্তি রয়েছে। 

যাহা বিষদ ব্যাখায় নিম্নরুপ-

প্রোটিন- ৩.০৩ গ্রাম
স্নেহ পদার্থ- এক পয়েন্ট দুই গ্রা
শর্করা- ৭.৯ গ্রাম
চর্বি-১ .০১গ্রাম
আয়রন- ৪.৮  গ্রাম
ফসফরাস ৪৫ মিলিগ্রাম এবং 
বিটা ক্যারোটিন-১৬৫০ মিলিগ্রাম মাইক্রো গ্রাম


কাঁকরোলের ভেষজ ও ঔষধি গুনাগুন

* ডায়াবেটিস সমস্যায় কাকরোল

উপকারী এই সবজি কাঁকরোলের মধ্যে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইটো নিউট্রিয়েন্ট পলিটেকটিড-পি এবং উদ্ভিজ্জ ইনসুলিন রয়েছে। 
যা মানব দেহের ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করতে খুবই কার্যকরী।
 এর গ্লাইকোজেন সংশ্লেষণ শরীরের মেদবাহুল স্থানের মেদ ছড়িয়ে দিতে এবং যকৃতের ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলে রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে খুবই কার্যকর।

* ভিটামিন সি এর অভাব পূরণ করতে কাকরোল

কাঁকরোল নামের এই সবজিটি অধিক ভিটামিন সি সম্পন্ন হওয়ায় মানবদেহে এন্টি অক্সিডেন্টের কাজ 
করে ।যার ফলে মানব দেহ সহজে টক্সিন ও অক্সাইড মুক্ত হয়ে থাকে ।এতে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায়।

* ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে



কাঁকরোল সবজিতে নিহিত , এক্সট্রা আলফা ক্যারোটিন, বিটা ক্যারোটিন ও নিউটেন ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে বাধা প্রদান করে ।এসব উপাদান ত্বকের উপর অংশের অযাচিত ও মৃত্যুক কোষ সমূহকে সহজেই দূরীভূত করিতে পারে। ফলে ত্বক হয়ে ওঠে চকচকে ও উজ্জ্বল।

* সর্দি ও কাশিতে 

সিজনাল সর্দি ও কাশিতে কাঁকরোল পাতা সিদ্ধ করা পানি খেলে জ্বর কমে যায় এবং আদার রসের সহিত কাঁকরোলের শিকড় এর রস মধুসহ মিশিয়ে খেলে কাশি সেরে যেতে পারে।

ভারতীয় আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে কাকরোলের লতাপাতা শিকড় ও সবজি সবই ডায়াবেটিসের মহৌষধ।

* কোষ্ঠকাঠিন্যে কাঁকরোল 

কাঁকরোলে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ফাইবার যা আপনার পেটের জমানো গ্যাস পরিষ্কার করে আপনাকে সুস্থ রাখতে পারে। এমন কি বহুদিনের পুরাতন কোষ্ঠকাঠিন্য কাকরুল সবজি খেয়ে উপকার পাওয়া যেতে পারে।




লেখক প্রাক্তন শিক্ষক ও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক।

Comments

Popular posts from this blog

গাছ আলুর উপকারিতা

পঞ্চমুখী এর উপকারিতা এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় চেতনা।

ইপিল ইপিল গাছের উপকারিতা ও সম্ভাবনা।